ক্যারিয়ার মানে হচ্ছে সহজ কথায় নিজের পছন্দের বা অপছন্দের বিষয়ে গড়ে ওঠা কাজের জীবন যেখানে অর্থিক স্বচ্ছলতা,মনের প্রশান্তি বা দেশের কল্যাণে আমরা কাজ করে যাই নিজের দক্ষতা বাড়াই।
আমি ছোট থেকেই ভাবতাম চাকরী করবো আসলে পরিবারের সবাই চাকরীজীবি ছিলেন ব্যবসা শব্দটিই অপরিচিত ছিলো,দুই ভাইয়ের ছোট হওয়ায় প্রচুর বিভিন্ন ধরনের বইপড়ার সুযোগ হয়েছে আমার। যেটা এখন কমে গেছে। সবাই বিসিএস এর কথা তখন খুব বলতো,কি সেটা না জেনেই স্বপ্ন দেখতাম বিসিএস দিতেই হবে। শিক্ষকতা পছন্দের ছিলো, অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে উঠেই ভাইয়া অনেক এসম্পর্কিত বই এনে দিয়েছিলো পড়েছি অনেকদিন।অনেক বই নিজেওকিনেছি বোঝার পর প্রতি মাসে কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স কিনতাম খবর রাখার জন্য। অনার্স রেজাল্টের পর আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পরের আর আগের জগৎ আকশ পাতাল পার্থক্য। এই জীবনে সবাই চাইবে তুমি কাজেও খুব পারদর্শী হবে সারাদিন সংসার সামলাবে আবার বিসিএস ক্যাডারো হয়ে যাবে কোনো পড়ালেখা ছাড়াই।
আমি আসলে পড়ার গুণে মেধাবী বলা যায় না পড়লেই ঠুস।মা খুব সহযোগিতা করতেন কিছু ধরতেই দিতেন না সারাদিন পড়তাম। বিয়ের পর সেটা হয়না, হঠাৎই মানুষিক চাপে নানা অশান্তিতে মাথা ব্যাথা শুরু হোলো সারাদিন পড়ে থাকতাম ব্যাথায় পড়ালেখা শিকেও উঠলো,আমরা দুজনেই ছিলাম বেকার সেই চাপটাও ছিলো, হাজব্যান্ড বললো চাকরী নয় আগে সুস্থ হও। কোচিং বই হাবিজাবি সব চিন্তা করে চাকরীর আসা বাদ দিলাম। সারাদিন ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট পেজ দেখতে দেখতে আগ্রহী হয়ে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করলাম ই-কমার্স উদ্যোক্তা হিসেবে।
আমার কাছে ক্যারিয়ার মানে হোলো যেটা আমি পারি যেটা আমি জানি সেটাকে কেন্দ্র করে এগিয়ে যাওয়া আনন্দের সাথে কাজ করা। আমার ইচ্ছা ছিলো নিজে কিছু করবো নিজের দায়ীত্ব নিজে নিবো সেটাই করেছি আমি। চাকরীর স্বপ্ন সারাজীবন দেখে এসেও হয়ে গেছি ই-কমার্স উদ্যোক্তা।
ই-কমার্সের কিচ্ছু সম্পর্কে না জেনে কাজে নামা আসলেই কঠিন ছিলো, আমার পৌরসভাতে আমি ছিলাম প্রথম ই-কমার্স সেক্টরে কাজ করা নারী উদ্যোক্তা,কাজ করার সিদ্ধান্ত এক মুহূর্তের ছিলো কিন্তু কাজ করে যাচ্ছি অনেকগুলো দিন। কোনো কিছু শুরু করতে পারা আর সেটাতে টিকে থাকতে পারাই বড় বিষয়।