ঈদ আসে আবার চলেও যায়, শুধু একটু কাজের চাপ বেশী থাকে এটাই এই ছাড়া আলাদা কিছু মনে হয়না, তবে অনেক দিন পর আম্মা আর মিঠুভাই নওয়াপাড়াতে ঈদ করেছেন ভালো লেগেছে,ভাইয়া প্রতিদিন রাজঘাটে গেছেন, সত্যি এই অঞ্চল আমাদের সবার জন্মস্থান নাড়ীর টান কখনো যায়না। আমি এবার ঈদে অনেকদিন পর সব রান্না নিজে করেছি, যেটা এই শরীরে কস্টকর ছিলো ভীষণভাবে, কিন্তু রাকিব আর ভাইয়ার জন্য দুইধরনের রান্নার চাপ শেলী আপাকে আর দেইনি যা পারি একাই করেছি, ঈদের আগেরদিন আর ঈদেরদিন শরীরের অবস্থা অতিরিক্ত খারাপ ছিলো, এই প্রথম কোনো ঈদে বাসায় থাকলাম, একবার বারান্দাতেও যেতে পারিনি।কারো সাথে দেখা হয়নি,আজ ভোরে ছটার দিকে ঘুমানোর পর উঠেছি এগারোটার পর, প্রচুর মেসেজের রিপ্লাই করিনি, এখন শুরু করবো দেওয়া।
অনেক বেশী শরীরের কস্টের মধ্যেও সবচেয়ে পজিটিভ দিক ছিলো প্রত্যেকটা ডেলিভারীর ফিডব্যাক ভালো ছিলো, খুব পছন্দ করেছে সবাই আমার কাজ, তার ভেতর এক আপুর ছেলের ফতুয়া একটু টাইট হয়েছে কিন্তু কাজ দেখে আপু আরো দুইটা অর্ডার করতে চেয়েছেন,বারবার বলেছেন অবশ্যই যেনো করে দেই, আর এক আপুর মেয়ের ফ্রক হালকা টাইট হয়েছে, আপু বলেছেন,” কাজটা এতো সুন্দর আপনি চিন্তা করবেননা ভেতরে কাপড় আছে আমি ঠিক করে নিবো,”
আর তিনজন আপুর কাজ শেষ করতে পারিনি, ডেলিভারী ঈদের আগে দেওয়া সম্ভব হয়নি, সেজন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত,আশাকরছি দ্রুত শেষ করতে পারবো।
আর কিছু আপুরা ঈদের একসপ্তাহ আগে নক করেছেন বারবার ড্রেস করে দিতে বলেছেন তাদের না বলতে কস্ট হয়েছে কিন্তু ঐ সময় অর্ডার নিয়ে আমি ঠিকঠাক দিতে পারতামনা।আপুদের কাছে আবারো রিকোয়েস্ট আমি সবসময়ই কাজের আপডেট নিজের আইডিতে আর পেইজে দিতে থাকি আপনারা একটু সময় হাতে নিয়ে অর্ডার করবেন আমার জন্য ভালো হয় তাহলে।
তারপরো অনলাইন আর অফলাইন মিলিয়ে দেড়সপ্তাহে ২৯টা ডেলিভারী দিয়েছি, যার ভেতর একেকজনের অনেকগুলো করে পণ্য অর্ডার ছিলো,লাভ লস বড় বিষয় নয়, কাজ করতে পারা,টিকে থাকা, আমার কাজের গ্রহণযোগ্যতা তৈরী হওয়াটাই আমার কাছে বড় বিষয়, কে কয়শো ডেলিভারী দিলো বা কত টাকার সেল করলো এটা বড় কথা নয় আমি কিভাবে আমার সীমাবদ্ধতাকে জয় করে এগিয়ে যাবো টিকে থাকবো,স্বপ্নকে ধরে রাখবো সেটাই আসল কথা আমার কাছে। সঠিক মূল্যে ভাল গুণগতমানের পণ্য তৈরী এই বাজারে অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং, তারপরো আমার চেষ্টা থাকে সবসময় ক্রেতার চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে পণ্যে নতুনত্ব এনে প্রাইসটাও সহনীয় রাখার।
আর পণ্য প্যাকেজিং এর পর তা আপনাদের সঠিক সময়ে পৌঁছে দেওয়া কখনোই সম্ভব হোতোনা কাছের মানুষটি সাপোর্টিভ না হলে, Rakib Hasan কে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা,কোনো কোনোদিন তাকে তিনচারবারো জ্বালিয়েছি কুরিয়ার করতে, রাত সাড়ে এগারোটাতেও সে দর্জির থেকে কাপড় নিয়ে আসছে,আর আমার মা এতো অসুস্থতা নিয়েও অনেক ড্রেস ওয়াশ আয়রন করে রেডি করে দিয়েছে, আর আমার প্রিয় সহকর্মীরা যারা দিনরাত এক করে কাজগুলো তুলে দিয়েছে তাদের কাছে সত্যিই আমি অনেক অনেক কৃতজ্ঞ।
আপনাদের বিশ্বাস ও ভরসার জায়গা হতে পেরে আমি আনন্দিত।
আর সুন্দরবন কুরিয়ারে প্রত্যেকটা পার্সেল ডেলিভারী দিয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ্ খুব দ্রুত পেয়েছেন সব কাস্টমার।
আমি যেহেতু উপজেলা শহর থেকে কাজ করি এখানে সুন্দরবনে ক্যশঅন ডেলিভারী সিস্টেম নাই তো সব আপুদের আবারো ধন্যবাদ বিশ্বাস রাখার জন্য।